বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন

রাজারহাটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাঁধুনী,পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মালি দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা

ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩
  • ৯৭ জন দেখেছেন

ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

 

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
রাঁধুনী,পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মালি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রোপচারের কাজ চলছে। এতে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের দারিদ্র্যপীড়িত রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসকের সঙ্গে অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী রবি দাস।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগসহ অপারেশন থিয়েটারে নিয়মিত অস্ত্রোপচারের কাজ করেন রাঁধুনী, মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীও।

ওই হাসপাতালে রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড বয় পদে কেউ না থাকায় উপজেলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চলছে জোড়াতালি দিয়ে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে থাকলেও জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে নেয়া হয়নি কোন কার্যকরি পদক্ষেপ। ফলে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা থেকে বছরের পর বছর ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছেন এই অঞ্চলের মানুষ।

সাবেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী রবি দাস বলেন, আমি গত ১ ডিসেম্বরে ঝাড়ুদার পদ থেকে অবসর নিয়েছি। আমি অপারেশন থিয়েটার ও জরুরি বিভাগে নিয়মিত কাজ করে আসছি। ডেসিং ও সেলাইয়ের কাজও করতে পারি। বর্তমান ও সাবেক অনেক চিকিৎসকের সঙ্গেই আমি কাজ করেছি।

ওই হাসপাতালের মালি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি ফুলের বাগান দেখভালের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। জরুরি বিভাগেও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হয় আমার,পাশাপাশি সেলাই ও ড্রেসিংয়ের কাজও করতে পারেন বলে জানান তিনি।

মেকুরটারি গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া বলেন, এই হাসপাতালে ঝাঁড়ুদার কাটা সেলাই করে, আবার সেই ঝাড়ুদারই ওষুধ দেয়। ভর্তি রোগীদের দেখতে নিয়মিত ডাক্তাররা রাউন্ড দেয় না। একবার দেখার পরদিন আসে ডাক্তার।

রাঁধুনী বাচ্চু মিয়া বলেন, হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় না থাকায় জরুরি বিভাগের দায়িত্ব পালন করছি।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, জনবল সঙ্কটের কারণে রাঁধুনী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মালি ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলছে জরুরি বিভাগ ও অপারেশন থিয়েটার।

রাজারহাট উপজেলা হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১২ সালে এই হাসপাতালটি ২৫ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করা হয়। এখানে ১০ জন মেডিক্যাল অফিসারের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ৮ জন, নার্সিং সুপারভাইজার ১ জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ২৬ জন, মিড ওয়াইফ ৬ জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান ২ জন, প্রধান সহকারী ১ জন, অফিস সহায়ক ৩ জন, ফার্মাসিস্ট ২ জন, পরিসংখ্যানবিদ ১ জন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২ জন, অ্যাম্বুলেন্স চালক ১ জন, মালি ১ জন, মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ৭ জনের পরিবর্তে ৫ জন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ৫ জনের পরিবর্তে ৩ জন, স্বাস্থ্য সহকারী ৩০ জনের স্থানে ১৭ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৬ জনের স্থানে ৪ জন, ওয়ার্ড বয় ৩ জনের পরিবর্তে মাত্র ১ জন।

এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দন্ত চিকিৎসক, এমটি ডেন্টাল, ইপিআই, রেডিওগ্রাফার, কার্ডিওগ্রাফার, ক্যাশিয়ার, স্টোর কিপার, জুনিয়র মেকানিকের পদগুলো শূন্য রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com