রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন

প্রচন্ড খরায় ঝরে পড়ছে আমের গুটি দুঃচিন্তায় আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৫৬ জন দেখেছেন

মোহাম্মদ আককাস আলী :

 

শস্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁ জেলা। এখন ধানের রাজ্যে দখলে নিয়েছে আমের রাজত্ব।এ ‘জেলা এখন ধানের পাশাপাশি আমের রাজধানী হিসাবে খ্যাত। এ বছর জেলায় আমের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা থাকলেও টানা খরার কারনে ও বৃষ্টি না হওয়ায় আমের গুটা ঝরে পড়ায় চিন্তিতায় পড়েছে ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকগণ। ঝরে পড়া আমের গুটি ঠেকাতে গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অফিস।

চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে জেলায় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন আম। যার বিক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৪২ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও গতবারের চেয়ে জেলায় এবার ৩ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আমচাষ বেশি হওয়ায় উৎপাদন অন্য যে কোনো সময়ের রেকর্ড ভাঙবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
নওগাঁ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে নওগাঁয় আম বাগান ছিল ২৪ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১২ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন আম। যার বিক্রয় মূল্য ছিল প্রায় ১ হাজার ৪৪১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত ২০২০-২১ মৌসুমে আমবাগান ছিল ২৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১৩ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৫ মেট্রিক টন আম। যার বিক্রয় মূল্য ছিল প্রায় ১ হাজার ৫৭০ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

চলতি মৌসুমে উপজেলা ভিত্তিক আম চাষের পরিমাণ হলো— সদর উপজেলায় ৪৪৫ হেক্টর, রানীনগরে ১১০, আত্রাইয়ে ১২০, বদলগাছীতে ৫২৫, মহাদেবপুরে ৬৮০, পত্নীতলায় ৮ হাজার ৮৬৫, ধামইরহাটে ৬৭৫, সাপাহারে ১০ হাজার, পোরশায় ১০ হাজার ৫২০, মান্দায় ৪০০ ও নিয়ামতপুরে ১ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে।
সাপাহারের সেওয়াপাড়া গ্রামের আরেক আমচাষি জাকারিয়া বলেন, ‘১০০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আমের বাগান তৈরি করেছি। গতবারের তুলনায় এবার সব বাগানে আম মুকুল অনেক ভালো এসেছে। গাছে মুকুল যেন ঝড়ে না পরে সেজন্য সার, কিটনাশক ও সেচ দেওয়া হচ্ছে।’তিনি আর বলেন, ‘গত বছরে করোনার কারণে আমের তেমন দাম পাই নাই। যার কারণে তেমন লাভ করতে পারি নাই। আশা করছি, এবার লাভবান হবো। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে আম রফতানি করা গেলে আমচাষিরা আরও বেশি লাভ হবে।’ জেলা কৃষিম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামসুল ওয়াদুদ জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আম গাছে মুকুল বেশ ভালো ছিল। এই সময়ে সাধারণত হুপার পোকার আক্রমণ করে। এছাড়া বিচিং পদ্ধতিতে সেচ না দেওয়ার কারণে মুকুল শুকিয়ে ঝড়ে পড়ে।

এগুলো থেকে রক্ষা পেতে ও ফলন ভালো পেতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমচাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমচাষিরাও সে মোতাবেক গাছের পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারে আমের ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে। এবছর আমচাষ বেশি হওয়ায় উৎপাদন অন্য যে কোনো সময়ের রেকর্ড ভাঙবে বলে মনে হচ্ছে। আম রফতানির চিন্তা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে স্বল্প পরিসরে আম বিদেশে রফতানি হয়েছিল এই জেলা থেকে। কিন্তু এবার আম রফতানির সকল নির্দেশনা মেনে বড় পরিসরে আম বিদেশে রফতানির চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com