রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৭ অপরাহ্ন

আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারে বিলুপ্তির পথে প্রাচীন সেচ যন্ত্রগুলো 

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৬৯ জন দেখেছেন

মোঃ আককাস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক

দোলনা সেচনি,সিয়ানি বা সেঁউতি অথবা জাঁতা পানি উত্তোলনের প্রাচীন কৌশল আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারে বিলুপ্ত। বর্তমানে শ্যালো মেশিন কিংবা গভীর নলকূপের বদৌলতে হারিয়ে গেছে প্রাচীন কৃষি সেচ যন্ত্র গুলো। একসময় মাঝ রাত অথবা সারারাত ধরে জমিতে সেচ দেওয়া যন্ত্র গুলো আর চোখেই পড়েনা। হাল চাষে কাঠের লাঙ্গল, ধান মাড়ায়ের পিড়ি আর সেচ কাজে ব্যবহৃত দোলনী, সেঁউতি বা জাতাঁর মত হারিয়ে গেছে মাথল, মই কিংবা ঢিল ভাঙানো বল্লমও। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাল চাষের জন্য ট্রাক্টর, মাড়াইয়ের জন্য মেশিন ছাড়াও কৃষি কাজে এসেছে নানান সুবিধা।

প্রাচীন কৃষি যন্ত্রপাতিতে দোলনা অথবা জাঁতা ছিল সেচ কাজের জন্য একমাত্র যন্ত্র। নিচু জলাশয় থেকে উঁচু জমিতে সেচ দিতে এটি ব্যবহার করা হতো। শক্ত টিনের তৈরি লম্বা নৌকার মত দেখতে এই কৃষি যন্ত্রটি দ্বারা সেচ দিতে বাঁশ এবং দড়ির প্রয়োজন পড়ে। আড়াআড়িভাবে বাঁশ দঁড়ির সাহায্যে বেধে তারপর সেঁউতিটির সমপরিমাণ লম্বা একটি বাঁশের মাথায় মাটিসহ বস্তা বেধে দেওয়া হতো, যাতে পানি ভর্তি যন্ত্রটি উপরে উঠে আসে। এ যন্ত্রটিতে একজন মানুষ দ্বারা সেচ দেওয়া সম্ভব। সেঁউতির গোড়ায় ভর দিয়ে মাঝ পর্যন্ত ডুবিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলে বস্তা ও মাটির ভরে পানি উপরে উঠে আসে।

 

অপর দিকে দোলনা বা ডাব এটিও টিনের তৈরি তবে এটি বাজারে কিনতে পাওয়া যেতো সে সময়, তবে কেউ কেউ এটি নিজেই তৈরি করতেন। কিছুটা বালতির আকারের এই যন্ত্রটি বরেন্দ্র অঞ্চলের কোথাও কোথাও লক্ষ করা যায়। দুই ধারে দুটি করে মোট চারটি লম্বা দড়ির সাহায্যে দুই জন মানুষ এটি দ্বারা সেচ দিতে পারে। তবে সেঁউতির চেয়ে সময় এবং শ্রম বিনিয়োগ হয় বেশি।

একসময় ডাব আর সেঁউতি দিয়েই জমিতে সেচ দেওয়া হতো। এখন গভীর নলকূপ হওয়ায় আর কষ্ট করতে হয়না চাষীদের।

প্রবীণ কৃষক পাঞ্জু সরদার জানান, আগে মানুষ অনেক কষ্ট করছে, আমিও সারারাত ধরে ইরি জমিতে সেচ দিয়েছি, তবে আগে মানুষের শরীর অনেক ভালো ছিল, আধুনিক যন্ত্রপাতি আসায় মানুষ অনেক অলস হয়ে পড়েছে, নানান ধরনের রোগ শরীরে বাসা বাঁধতেছে।

বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশও এগিয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিতে কৃষি হোক আগামীর সমৃদ্ধির পথে, কৃষি প্রধান দেশটিতে কৃষিই হোক আগামীর সম্ভাবনা। তবে বেঁচে থাকুক ঐতিহ্য, বেঁচে থাকুক বাঙলার কৃষি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com