সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৩ অপরাহ্ন

ময়মনসিংহে অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে এ কেমন বৈসম্যতা?

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট সময় : রবিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৪২৭ জন দেখেছেন

 

শিবলী সাদিক খানঃ

ময়মনসিংহ জেলার মোট ২৩৯টি ইটভাটার মধ্যে ১৯৬টির পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। মাত্র ৪৩টি ইটভাটা বৈধ বলে অনুমোদিত। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও জ্বালানি হিসেবে নিষিদ্ধ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বেশির ভাগ ইটভাটায়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের নিয়মিত অভিযানে বেশ কিছু অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু ভাটা মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। ছাড়পত্র না পাওয়া ভাটাগুলোর বেশির ভাগই সনাতন পদ্ধতির ১২০ ফুট চিমনি ব্যবহার করছে। কিছু চিমনি আবার জিগজাগ পদ্ধতির। এসব চিমনি ব্যবহার আইনত নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয়।
তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে নামমাত্র লোক দেখানো অভিযান চলে। বেশির ভাগ ভাটাই নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে চালু রয়েছে প্রশাসনের নাকের ডগায়।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলায় অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৫টি, ত্রিশালে ৩৭টি, ভালুকায় ২০টি, গফরগাঁওয়ে ১৮টি, নান্দাইলে ১৮টি, ঈশ্বরগঞ্জে চারটি, গৌরীপুরে ১২টি, মুক্তাগাছায় ১৯টি, ফুলবাড়িয়ায় ১৫টি, ফুলপুরে ৮টি ও হালুয়াঘাটে ১০টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে গফরগাঁওয়ে অবৈধ ভাবে পরিচালিত “ইট ভাটাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হইলো” এমন নোটিশ ৮টি ভাটাকে প্রদান করা হয়। অপর দিকে “ভাটার কার্যক্রম বন্ধের নোটিশ প্রদান করা হইল” এমন নোটিশ ৮টি ভাটাকে প্রদান করা হয়। এর মধ্য হতে তিন ভাটার উপর একাধিকবার অভিযান পরিচালিত হয়। এই অভিযানের বৈসম্যতা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার আক্রোশপূর্ণ নাকি স্থানীয় অন্যান্য ইটভাটার প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে একই ভাটায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করছেন?
অবৈধ প্রতিটি ইট ভাটার মালিকদের কারণ দর্শানো ও বন্ধের নোটিশ দেওয়া হলেও কেন তিনটি ইট ভাটায় একাধিকরার অভিযান পরিচালনা করা হলো?
৮নং শান্তা খান ব্রিকস ১০০০০০টাকা,
৯নং বিবিএম ব্রিকস ৩০০০০০ টাকা,
১১নংপারভেজ এন্টারপ্রাইজ ৩০০০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এর আগেও দুবার জরিমানা করা হয়। অন্যান্য গুলো কেন অভিযান পরিচালনা থেকে বাদ পড়লো? একাধিক ইটভাটা সূত্রে জানা যায় প্রতিটি ভাটা থেকে সিজন শুরু হলে দের লক্ষ টাকা সমিতির মাধ্যমে দিতে হয়। সমিতির কর্তাব্যক্তিরা এ টাকা বিভিন্ন ফান্ডের নামে জমা দেন। আবার অভিযান সামলাতে ম্যানেজ করতে হয় কতিপয় কর্তাব্যক্তিদের। এসকল অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করার জন্য কারা দায়ী! যারা সততার সাথে কাজ করবেন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, তারাই যদি জড়িয়ে পড়েন, তাহলে বুঝতে হবে তাদের সিন্ডিকেট অনেক বড় শক্তিশালী।
রবিবার (২১ জানুয়ারি ২০২৩) এবিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক দিলরুবা আহমেদ বলেন, আদালতের আদেশ অমান্য করে ২০২২ সালে ইটভাটার নাম পরিবর্তন করে ইট পোড়ানোর কাজ চালানো এবং আদালত অবমাননা সংক্রান্ত পিটিশন নং২৪/২৩ এবং লিভ টু আপিল নং ২২৮৮/২৩ চলমান বা থাকা অবস্থায় চলছিল এ সকল ইট ভাটা। তিনি আরো বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ সংশোধন)আইন ২০১৯ অনুযায়ী বিশেষ কোন স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, রেলপথ,নৌপথ স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইট ভাটা স্থাপন করতে হবে। এই বিষয় শুলো গুরুত্ব দিয়ে অভিযান চলছে। গত দুদিন আগেও গফরগাঁওয়ে পাতলাসী গ্রামের আরো তিনটি ইট ভাটায় অভিযান পরিচালিত হয় বৈসম্য সৃষ্টি করার সুযোগ নাই। অবৈধ ইট ভাটায় অভিযান চলবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইট ভাটার মালিক জানিয়েছেন বিভিন্ন ফান্ডের নামে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি অফিসের নায়েব, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকল অফিসের কর্তাব্যক্তিদের নাজরানা দিয়ে ইট ভাটার ব্যবসা করতে হয়, আবার জরিমানা দিতে হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com