শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

সলঙ্গায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ-কোর্টে মামলা দায়ের

মোঃ লুৎফর রহমান লিটন, সলঙ্গা সিরাজগঞ্জে প্রতিনিধি 
  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৪৯ জন দেখেছেন

মোঃ লুৎফর রহমান লিটন, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

 

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায়এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগে কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে।

 

রবিবার( ২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার সময় সরজমিনে গিয়ে জানাযায় থানার বড় চৌবিলা গ্রামের শাহজাহান আলী মোল্লার মেয়ে সাজেদা খাতুনের সাথে পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার হ্যাড়িভাসা গ্রামের সোনাউল্লার ছেলে নূর ইসলামের সাথে ২০০৬ সালে ইসলামি শরীয়ামোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্ত্রীকে নিয়ে শশুরালয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে।এমতাবস্থায় থানার চৌবিলা চকপাড়া গ্রামের মৃত আহমদ আলীর ছেলে চৌবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আঃ মোমিন(৪৫) বিভিন্ন সময়ে কারণে -অকারণে কু-প্রস্তাব দেয় এবং প্রেম নিবেদন করতে থাকে। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঃ মোমিন নূর ইসলামকে তার স্ত্রী সাজেদাকে ছেড়ে দিয়ে এলাকা ত্যাগ করতে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। এরই এক পর্যায়ে গত ১২ অক্টোবর/২২ইং রোজ বুধবার দুপুর আনুমানিক ২টার সময়ে উল্লাপাড়া উপজেলাধীন ধামাইকান্দি বাজারের বাংলালিংক টাওয়ার সংলগ্ন ভাই বোন হোটেলের সামনে থেকে মোমিন মাষ্টার সিএনজি যোগে সলঙ্গা বাজারে যাওয়ার কথা বলে সু-কৌশলে নূর ইসলাম কে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকেই নূর ইসলাম নিখোঁজ। নূর ইসলামের বাবার বাড়ী পঞ্চগড় ও এলাকার বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে খোঁজ খবর নিয়েও অদ্যবদী তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। নূর ইসলামের পরিবারের লোকজনের ধারণা নূর ইসলাম কে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নূর ইসলামের স্ত্রী সাজেদা খাতুন গত ২২ডিসেম্বর/২২ ইং তারিখে

বিজ্ঞ উল্লাপাড়া থানা আমলী আদালত,সিরাজগঞ্জ। যাহার পিটিশন নং ২৮৫/২২, বাদী হয়ে সন্দেহমূলক সলঙ্গা থানার চৌবিলা চকপাড়া গ্রামের মৃত আহমদ আলীর ছেলে ১. আঃ মোমিন(৪৫), ২.মাসুদ(৩৫), ৩.মতিন(৩৫) কে আসমী করে একটি গুমরে মামলা দায়ের করে।

 

এ ব্যাপারে নূর ইসলামের স্ত্রী সাজেদা খাতুনকে জিজ্ঞসা করা হলে তিনি বলেন আমি ও আমার পরিবারের লোকজন অনেক যায়গায় খোঁজা খুঁজি করেছি। কিন্তু কোথাও আমার স্বামীর সন্ধান পাইনি। আমার ধারণা পূর্ব শত্রুার জেরধরে মোমিন মাষ্টার ও তার লোকজন আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করে রেখেছে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে এবং দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে কোর্টে মামলা দায়ের করেছি। আমি এর বিচার চাই।

 

এবিষয়ে সলঙ্গা ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলবার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নূর ইসলাম নিখোঁজ। নিখোঁজ পরবর্তীতে গুমের মামলা হয়েছে তাহা নূর ইসলামের স্ত্রী সাজেদার মুখে শুনেছি। কিন্তু কে-বা-কাহারা তার স্বামীকে গুম করেছে আমি তাহা জানিনা। সাজেদা খাতুন কোন এক পরকিয়ার টানে নূর ইসলাম কে ডিভোর্স দিয়ে মোমিন মাষ্টার কে বিয়ে করেছিলো। কিছু দিন ঘর সংসার করার পরে সাজেদা খাতুন আবার মোমিন মাষ্টার কে ডিভোর্স দিয়ে নূর ইসলামের ঘরে ফিরে আসে। তবে মোমিন মাষ্টার ও সাজেদার বিষয়ে একাধিক বার দরবার সালিশ করেছি। আমি চাই সাজেদা খাতুনের স্বামী নূর ইসলাম যেন অক্ষত অবস্থায় ফেরত আসে।

 

এবিষয়ে চৌবিলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণেশ বাবুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মোমিন মাষ্টার আমার বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। উনি এক সময় সাজেদাকে দিয়ে নূর ইসলাম কে ডিভোর্স করাইয়া সাজেদাকে বিয়ে করে। কিছু দিন ঘড় সংসার করার এক পর্যায়ে সাজেদা খাতুন আবার মোমিন মাষ্টার কে ডিভোর্স দিয়ে পুনরায় পূর্বের স্বামী নূর ইসলাম কে বিয়ে করে। হয়তবা সে কারণে মোমিন মাষ্টার ও সাজেদার মধ্যে কোন না কোন দন্দ থাকতে পারে। সাজেদার স্বামী নূর ইসলাম নিখোঁজের সংবাদ টি বিভিন্ন লোকমরফত জানতে পেরেছি। কিন্তু আমার স্কুলের শিক্ষক মোমিন মাষ্টার ঘটনার সাথে জরিত আছে কিনা তাহা আমার জানা নাই। মোমিন মাষ্টারের নামে কোর্টে মামলা হয়েছে এটা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তবে আমার নিকট এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ আসে নাই। অভিযোগ পেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এলাকাবাসীর নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন নূর ইসলাম কে বেশ কিছুদিন যাবৎ এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তবে নূর ইসলাম অক্ষত অবস্থায় তার পরিবারের নিকট ফিরে আসুক এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com