বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০১:৫২ অপরাহ্ন

রাজারহাটে কালিরহাট বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন কর্মচারীদের বাদ দিয়ে গোপনে নিয়োগ

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট সময় : শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • ৩৪২ জন দেখেছেন

 

ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করলেও বেতন মঞ্জুরি কমিশনের আওতাভুক্ত হবার পরে তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন কর্মচারী নিয়োগ দেবার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার কালিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিয়োগপ্রাপ্ত তিন কর্মচারীকে বাদ দিয়ে অবৈধভাবে নতুন নিয়োগে ৪০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা এ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অবৈধ ও সাজানো নিয়োগ বলে দাবি করেছেন।

বিদ্যালয়টিতে ২০০০ সালে সোমনারায়ণ গ্রামের অনিল চন্দ্র বণিক (নৈশপ্রহরী), আবদুল মতিন (ঝাড়ুদার) ও সুরুজ্জামান সরকার (এমএলএসএস) নিয়োগ পান। বিদ্যালয়টি নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন সুবিধাবঞ্চিত অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিলেন। ২০২১ সালে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ কর্মচারীর নতুন পদ সৃষ্টি হয়। সে অনুযায়ী আগের নিয়োগপ্রাপ্ত ওই তিনজনের এমপিওভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে বিষয়টি গোপন রাখেন।

প্রধান শিক্ষক তাঁর ভাই রুহুল আমীনকে সভাপতি, নুর ইসলামকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আত্মীয় আবদুর রফিককে দাতা সদস্য দেখিয়ে গোপনে পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। এরপর আগের নিয়োগপ্রাপ্ত ওই তিন কর্মচারীকে নিয়মবহির্ভূতভাবে অব্যাহতি দিয়ে নতুন করে আয়া পদসহ চারটি পদে অপ্রচলিত পত্রিকায় গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

নীতিমালা অনুযায়ী কোনো কর্মচারী বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে পরপর তিনবার নোটিশ দেওয়া হবে। তারা জবাব না দিলে একজন সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করতে হবে। প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে অনুপস্থিত কর্মচারীদের রেজুলেশনের মাধ্যমে অব্যাহতি দিতে হবে। এসব বিধিবিধান অনুসরণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নিয়োগের বিষয়টি জানাজানি হলে ২৫ জানুয়ারি আগের নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজন ও তাদের স্বজনরা বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানান।

এ সময় ডিজির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা এলাকা ত্যাগ করেন। পরে অবৈধ ও সাজানো নিয়োগ বাতিল করে আগের নিয়োগপ্রাপ্তদের বহাল রাখার দাবিতে রোববার ভুক্তভোগীরা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেন।
আগের নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত অনিল চন্দ্র জানান, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে দেড় একর জমি বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে নিয়োগপত্র নিয়েছেন। দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা দেওয়া হয়নি। তাদের দু’বার শোকজ করা হয়েছে। এরপর আর কিছুই জানানো হয়নি। সুতরাং নতুন নিয়োগ অবৈধ।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ।
কালিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, আগের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। তাদের দুবার শোকজ করা হয়েছিল। জবাব না পেয়ে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ডিজির প্রতিনিধি ও কুড়িগ্রাম সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নবাব আলী বলেন, আগের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীর পদে পুনর্নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে জানা ছিল না। একই কথা বলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রব। তাঁর ভাষ্য, শূন্যপদে আগের নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি থাকার বিষয়টি জানা থাকলে তিনি নিয়োগ বোর্ডে অংশ নিতেন না।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলম মুঠোফোনে বলেন, আমি ঢাকায় এসেছি অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব মুঠো ফোনে বলেন জেলা থেকে তদন্তের নির্দেশনা পেয়েছি শীঘ্রই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com