বাগমারা প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে বিরোধী পক্ষের পোস্টার লাগাতে বাধা,হামলা,ভাংচুরের ঘটনায় ৩জন আহত হয়েছে।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির পক্ষে প্রচারণা চালানোর সময় বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে কাঁচি মার্কার পোস্টার লাগাতেও বাধা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।মঙ্গলবার দুপুরে দামনাশ বাজারে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের পক্ষে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শনে যান এনাগ্রুপের কর্মকর্তাগণ। সেখানে নৌকা প্রার্থীর সমর্থিত নেতাকর্মীরা ওই গাড়িতে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে এবং চাবি কেড়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

সেই সাথে তাহেরপুর বাজারে কাঁচি প্রতীক সম্বলিত একটি শান্তিপূর্ণ বাইসাইকেল র‌্যালিতে হামলা ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাইসাইকেল ভেঙ্গে ফেলে তারা। পাশাপাশি র‌্যালিতে থাকা ছোট ছোট শিশুদের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে পরিহিত টি-শার্ট টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়। এছাড়া ধারালো চাকু দিয়ে একজনের গলায় আঘাত করা হয়। এ সময় অনেক শিশুকে মারপিট করে নৌকার নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে যাত্রাগাছী বাজারে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কর্মী সমর্থকের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে নৌকা সমর্থিত নেতাকর্মীরা। ওই হামলায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম, আবুল কাশেম ও জিল্লুর রহমান। আশরাফুলের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসক। এছাড়াও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার কর্নিপাড়া মহল্লায় আবু বাক্কার সিদ্দিক নামের আরেক সমর্থকের উপরে হামলা চালায় তারা। এ সময় তারা আবু বাক্কার সিদ্দিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে। তাদের হামলায় চোখের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে আবু বাক্কার সিদ্দিকের।

অন্যদিকে গনিপুর ইউনিয়নের আচিনঘাটে কাঁচি প্রতীকের কর্মীদের উপর হামলা করেন নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের কর্মিরা। তারা কাঁচি প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। পোস্টার যেন না ছেঁড়া হয় যে জন্য নিষেধ করার কারনে হামলার ঘটনা ঘটান। সেই সাথে মারপিট করে এবং দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। পাশাপাশি যতো পোস্টার ব্যানার ছিল সব কিছু নিয়ে চলে গেছে গেছে বলে জানা গেছে।

শুধু হামলায় না বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নৌকার নেতাকর্মীরা ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের ব্যানার পোস্টার টাংগাতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন নেতৃবৃন্দ।
উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেঁউখালীতে পোস্টার লাগাতে বাধা দেয় নৌকার সমর্থক রাজিব শাহ,জাকির হোসেন,মনছুর রহমান সহ অনেকে।এছাড়াও গোয়ালকান্দি বাজারে পোস্টার লাগাতে গেলে গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের অনুসারিরা পোস্টার লাগাতে বাধা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করে কাঁচি মার্কার সমর্থকরা।
ফলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেক ভোটাররা।

এ ব্যাপারে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাগমারায় নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রার্থী সহ তার অনুসারীরা। সমগ্র বাগমারা জুড়ে তারা তান্ডব চালাচ্ছেন। বাগমারাকে আবারও অশান্ত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নৌকার প্রার্থী সহ কর্মীরা। শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে তারা। শান্তিপূর্ণ বাগমারার মানুষ আর সন্ত্রাস চায় না। আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়ে ভোটে জয়লাভের আশা করে লাভ নেই। বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত হামলার ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। উপজেলা জুড়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।