ফরিদপুরে মুক্তিপণের দাবিতে আবু বক্কার (৮) নামের এক শিশুকে গলাটিপে হত্যার দায়ে এক যুবকের ফাঁসি ও অপর আরেক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম মো. জিন্দার খলিফা (২৬)। সে জেলার নগরকান্দা উপজেলার মেহেরদিয়া এলাকার টুকু খলিফার ছেলে। একই সঙ্গে তাকে ৭০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মাহাবুল শেখ (৩৯)। সেও একই উপজেলার মেহেরদিয়া গ্রামের কাঞ্চু শেখের ছেলে। আদালত মাহাবুলকে যাবজ্জীবনের পাশাপাশি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন। রায় ঘোষনার সময় আসামিরা আদলতে হাজির ছিলেন। পরে তাদের পুলিশ প্রহরায় জেলা হাজতে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১ লা জুন ফরিদপুরের নগরকান্দার মেহেরদিয়া এলাকায় মুক্তিপণের দাবিতে আবু বক্কার নামের এক শিশুকে গলাটিপে হত্যা করে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। শিশু আবু বক্কার ওই এলাকার পাচু খলিফার ছেলে। পরে এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় একটি এজাহার দায়ের করে ওই শিশুর বাবা। পরে নগরকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল গাফফার দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেন। দীর্ঘ তথ্য ও সাক্ষী এবং আসামির নিজস্ব জবানবন্দি বিচার শেষে ঘটনার পাঁচ বছর পর আদালত এ রায় দিলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) স্বপন কুমার পাল জানান, ফাঁসির আসামি জিন্দার খলিফা তার বয়ানে বলেছেন, ভিকটিম তার আপন চাচাতো ভাই। সে নিজেই তার সহযোগিকে নিয়ে আবু বক্করকে পুরি খাওয়ার কথা বলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাকে লুকানোর জাগা না পেয়ে ওই রাতেই তাকে গলাটিপে হত্যা করে কুমার নদের কচুরিপানার নিচে রেখে চলে যায়। ২০১৯ সালের জুন মাসের ২ তারিখে জিন্দার খলিফা আবু বক্করের বাবার কাছে মুঠোফোনে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে আটক হলে নিজেই তার ভাইয়ের লাশ কচুরিপানার নিচ থেকে উদ্ধার করেন জিন্দার।
পিপি এসময় আরো বলেন, আসামি পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। এ রায়ের ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে এবং দেশে আইনের শাসনের পথ সুগম হবে।