বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন

নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলতে প্রার্থী হয়েছি : চৌদ্দগ্রামে নির্বাচনী সমাবেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট সময় : বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৫৭ জন দেখেছেন

 

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থী, পৌরসভার সাবেক মেয়র মো: মিজানুর রহমান মিজান এর ফুলকপি মার্কার সমর্থনে এক বিশাল নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (০৩ জানুয়ারি) বিকালে চৌদ্দগ্রাম এইচ জে সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মো: মিজানুর রহমান মিজান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘আজকে চৌদ্দগ্রাম উন্নয়নের পরিবর্তে সন্ত্রাসের জনপদে রূপান্তর করা হয়েছে। এ চৌদ্দগ্রামে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার উদ্দীন রেজা বীর প্রতীক ও একজন কলেজ অধ্যক্ষের উপর পরিকল্পিত হামলা করা হয়। গত ৬ জুন চৌদ্দগ্রামবাসী পৌরসভায় অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখেছে। সেদিন দলীয় অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। সেদিন রক্তে রঞ্জিত হয়েছিলো চৌদ্দগ্রামের রাজপথ। চৌদ্দগ্রাম বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করা হয়েছে। চৌদ্দগ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হয়েছে, হামলা-মামলার শিকার হয়েছে। চৌদ্দগ্রামের মানুষ এমপি লীগের রোষানল থেকে বাঁচতে চায়। যার প্রতিবাদে ও সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আমি ফুলকপি প্রতীক নিয়ে ভোটারদের নিকট ভোট প্রার্থনা করতে এসেছি। নির্যাতিত নিপিড়ীত মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্য আমি আজ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘চৌদ্দগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ নেই। পূরনো দিনের মতউ রয়ে গেছে স্বাস্থ্য সেবা। আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও কেনো সরকারী এ হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে উন্নীত হয়নি। দক্ষিণ চৌদ্দগ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও পুলিশি সেবা সহজকরণের লক্ষে একটি পুলিশ ফাঁড়ি গঠন সময়ের দাবি ছিলো। কিন্তু এমপি সাহেব তাহা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’

এ সময় তিনি নৌজার প্রার্থী মুজিবুল হক মুজিব এমপিকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, ‘আপনি শুধু বলেন মেয়র মিজানকে আমি তিনবার পৌর মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছি। পরিবর্তন দরকার ছিলো, তাই অন্যকে মনোনয়ন দিয়েছি। আপনিও তো আটবার এমপি পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন৷ আপনি তো কখনো নিজের পরিবর্তনের কথা বলেন না। চৌদ্দগ্রামের মানুষ আজ পরিবর্তনের পক্ষে কথা বলায় আপনি তাদেরকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। আপনার জন্য আমার পরিবারের অবদান আপনি কিভাবে ভুলে গেলেন মুজিব ভাই? দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে আপনার হৃদয়ন কি একটুও কাঁপেনা? চৌদ্দগ্রামের মানুষের সাথে আপনি অসদাচরণ করে তাদের মন থেকে উঠে গেছেন। আপনার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবী দখল করে আছে হাইব্রিড কিছু লোক।’

তিনি আরো বলেন, ‘চৌদ্দগ্রামের যুবসমাজ আজ বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে নানান কষ্টে দিনাতিপাত করছে। সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও আপনি তাদের জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। চৌদ্দগ্রামের মানুষ বলে, আপনার জন্য রক্ত দিয়েছে চৌদ্দগ্রামের মানুষ, অথচ চাকুরী পায় ভিন্ন উপজেলার মানুষরা। চৌদ্দগ্রামের সর্বত্র আপনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। আমার পোস্টার ছিড়ে, নির্বাচনী প্রচারণা বাধাগ্রস্ত করে আমাকে চৌদ্দগ্রামের মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যাবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি যদি এমপি নির্বাচিত হই তাহলে চৌদ্দগ্রামে সকল হানাহানি বন্ধ হবে। চৌদ্দগ্রাম হবে শান্তির জনপদ। ভিন্ন দলের নেতাকর্মীরাও এ চৌদ্দগ্রামে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ পাবে। চৌদ্দগ্রামের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন, বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সঠিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া সহ উন্নত ও স্মার্ট চৌদ্দগ্রাম বিনির্মানে নিরলসভাবে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।’

এ সময় তিনি সকল হিংসা বিভেদ ভুলে আগামী ৭ জানুয়ারি সারাদিন ফুলকপি মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করে সকল অন্যায়-অত্যাচারের সমুচিত জবাব দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানান এবং সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান ভূঁইয়া হাসান এর সভাপতিত্বে ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়াজীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর কাজী জহিরুল কাইয়ুম বাচ্চু মিয়ার পুত্র কবি কাজী কামাল কাইয়ুম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আলকরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক হেলাল, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার উদ্দীন রেজা বীর প্রতীক, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, গুনবতী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, চৌদ্দগ্রাম কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি আলী আশ্বব, শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শাহজালাল মজুমদার, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও গুনবতী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা শাহ হেলাল খুরশিদ, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওনা শিল্পী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এএসএম শাহীন মজুমদার, পরিবহন মালিক সমিতির নেতা চৌধুরী জাফর আহমেদ, মুন্সীরহাট বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান খোকা, আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বাচ্চু, কনকাপৈত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ নয়ন, কনকাপৈত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন শান্ত, আলকরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াদ হোসেন জাবেদ, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. আবদুল জলিল পাটোয়ারী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শামছুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু, উপজেলা যুবলীগ নেতা কাজী ইকবাল প্রমুখ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com