বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন

সিংড়ায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

মোঃ এমরান আলী রানা নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২
  • ১০২ জন দেখেছেন

মোঃ এমরান আলী রানা নিজস্ব প্রতিবেদক

আবহমান কাল থেকে বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। তাই শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে চলনবিলাঞ্চলের সিংড়া উপজেলায় গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার করার জন্য দা, দড়ি তৈরি, মাটির ঠিলে ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রয়েছে।

দুপুরের সূর্য মাথার উপর থেকে পশ্চিমে হেলতে শুরু করেছে। হালকা বাতাসে খেজুর গাছের লম্বা পাতা দোল খাচ্ছে। সেই ফাকে সোনালি সূর্যের রঙ্গিন আভা রসের হাড়িতে পড়ে চিকচিক করছে। খেজুর গাছের মাথায় উঠে দড়ি পেঁচিয়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছের মাতি ও ময়লা পরিস্কার করছেন গাছিরা। কোমরের ডান পাশে পেঁচানো দড়িতে ছোট্ট বাঁশের খাঁচিতে কিছু ধারালো বাটাল আর পেছনে রসের হাড়ি ঝোলানো তাঁদের। দৃশ্যটি উপজেলার মহিষমারী থেকে সোনাপুর, পাঙ্গাশিয়া, কলম হয়ে শাঐল গ্রামীণ সড়কের। মনকাঁড়া এ দৃশ্য উপভোগ করার মত।

গাছিরা বলেন, শীত চলে আসছে। এখন খেজুর গাছ তোলার সময়। খেজুর রসের গুড়-পাটালি তৈরি করে সিংড়া, কলম, হাতিয়ান্দহ, বিলদহর, শেরকোল, বিয়াশ, চাচকৈড়, নাটোর, মৌখাঁড়া, তেবাড়িয়া, নলডাঙ্গা, আহসানগঞ্জ ও তাড়াশ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এতে আমরা লাভবান হয়ে থাকি।

উপজেলার পুঠিমারী গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে কয়েকটা খেজুর গাছ রয়েছে, নিজেই রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে বিক্রি করে থাকি।

উপজেলার বেলোয়া গ্রামের গাছি মজিবর রহমান বলেন, প্রতিবছর এক’শ থেকে দেড়’শ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকি। গাছের মালিককে ৪-৫ কেজি করে গুড় দিতে হয়।

পৌর শহরের রফিকুল ইসলাম রপু নামের একজন গাছি জানান, কয়েকটা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছি। গুড়ের দাম বেশি পাবো তবে অন্যান্য খরচও বেশি।

স্থানীয় গাছি ছাড়াও রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে প্রতি বছর গাছিরা এসে এ অঞ্চলে খেজুর গাছ ভাড়া নিয়ে রস থেকে গুড় তৈরি করে থাকেন। উপজেলার চৌগ্রাম, সোহাগবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় টাকা ও গুড়ের বিনিময়ে গাছ ভাড়া নিয়ে শত শত খেজুর রস সংগ্রহ করে সুমিষ্ট গুড় তৈরি করে বাজারজাত করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, খেজুর গাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। উত্তরাঞ্চলের খেজুর গুড়ের চাহিদা দেশজুড়েই। খেজুর গুড়ের মধ্যে পাটালী আর লালীই বেশি প্রসিদ্ধ। এ বছর গুড়ের দাম বেশি হওয়ায় গাছিরা লাভবান হবে বলে আমরা আশাবাদী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com