মমিনুল ইসলাম মুন বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় মূলধারার বাইরে একশ্রেণীর টিভি সাংবাদিকের প্রতারণার জাল, চাঁদাবাজি ও চরম দৌরাত্ন্য জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সুত্র বলছে, অর্থের বিনিময়ে অপ্রচলিত টিভি চ্যানেলের কার্ড কিনে এরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো জেলা। এদের প্রধান টার্গেট ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এরা এসব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ও বিভিন্ন কৌশলে মানুষকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। মুলধারার সাংবাদিকগণের নিদ্রিস্ট এলাকা থাকে। তবে, এসব কথিত টেলিভিশন সাংবাদিকের কোনো নিদ্রিস্ট এলাকা নাই বরং নিজ এলাকায় এরা প্রতারক হিসেবে চিন্হিত এদের কোনো তৎপরতা নাই, এরা আশপাশের জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের সঙ্গে টেলিভিশন সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা করছে।
তাদের এসব অপকর্মের কারণে মুলধারার সাংবাদিকগণ প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার ‘এ’ আদ্যাক্ষরের অপ্রচলিত একটি টিভি চ্যানেলের ৫ সাংবাদিক সাদা রঙের মাইক্রোবাস নিয়ে দিনভর তানোরের বিভিন্ন ইউপি ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটাছুটি করে অবৈধ সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে।
এক ইউপি ভুমি অফিসে ২০ হাজার টাকা দাবি করে না পেয়ে খবর প্রকাশের হুমকি দিয়েছে। সচেতন মহলের ভাষ্য,আসলে তারা যদি সংবাদ করতে চাই, তাহলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সংবাদ করতেই পারেন।কিন্ত্ত তা না করে দিনভর অফিসের বারান্দা, চিপা-চাপায়, ফুসুর-ফাসুর ও কানাকানি করা কেনো।
স্থানীয়রা বলছে, এরা ছাগল খোয়াড় দেয়া থেকে শুরু করে কুকুরের ঝগড়া ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুক পেইজে আপলোড দিয়ে টিভি চ্যানেলের নামে প্রচার করে। কোনটি আইপি টিভি, কোনটি অনলাইন টিভি,কোনটি স্যাটেলাইট টিভি সেই সম্পর্কে সিংহভাগ মানুষের কোনো ধারণা নাই। আর সাধারণ মানুষের এই অজ্ঞতাকে পুঁজি করে প্রতারক চক্র টেলিভিশন চ্যানেলের নামে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এদের গলায় রঙবেরঙের ব্যাগ, কোমরে হরেক রঙের বাহারী পরিচয়পত্র, হাতে নানা রঙ-ঢঙ ও সাইজের মাইক্রোফোন ঝুলিয়ে এদের বেশিরভাগ নতুন মোটরসাইকেলে চষে বেড়ায় পুরো এলাকা যেনো দেখার কেউ নেই। এদের বেশ-ভুষা দেখে দাপুটে সাংবাদিক মনে হলেও পরিচয়পত্র দেখলেই চোখ ছানাবড়া হওয়ার অবস্থা। এদের কারণে মুলধারার পেশাদার সাংবাদিকগণ রয়েছেন চরম বিপাকে। সচেতন মহল এসব কথিত (ভুয়া) টেলিভিশন সাংবাদিকদের বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।