শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন

বাঘায় ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে কোচিং শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

বাঘা উপজেলা প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩
  • ১১০ জন দেখেছেন

বাঘা উপজেলা প্রতিনিধি :

রাজশাহীর বাঘায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুমা আকতার(১৪) ( ছদ্মনাম)
কে যৌন হয়রানির অভিযোগে জহুরুল ইসলাম(২৭) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে আদালতে
মামলা দায়ের হয়েছে। গত বুধবার( ৯ ফেব্রুয়ারি ) দুপুরে রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা ছাত্রীর পিতা ইমরান হোসেন। অভিযুক্ত যুবক উপজেলার পাকুড়িয়া ইউপির হাজামপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, অভিযুক্ত জহুরুল ইসলাম কিছুদিন পূর্ব হতে এলাকায় কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ান। বাদী তার মেয়ের পড়াশুনার উন্নয়ন কল্পে মেয়েকে তার নিকট ভর্তি করিয়েছিলো। কোচিং এ ভর্তির কিছুদিন পর হতেই ভিকটিম এর প্রতি খারাপ মনোভাব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কোচিং এর নির্দিষ্ট সময়ের পরেও পড়ানোর নাম করে মেয়েকে বসিয়ে রাখত। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি( বুধবার ) কোচিং ছুটির পরে ওই ছাত্রীকে নোট দেওয়ার কথা বলে বসতে বলে। অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রী চলে গেলে ভিকটিমের নিকট এসে তার পাশে বসে এবং তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব প্রদানসহ শরীরের স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দিয়ে হাতে ১টি চিঠি দেয় এবং বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা বলে।
তখন ওই ছাত্রী বাড়ীতে গিয়ে এইসব ঘটনা মাকে জানাবে বললে জহুরুল
ভিকটিম রুমা আকতার ( ছদ্মনাম) এর নিকট হতে চিঠিটা কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এরপর ওই ছাত্রী বাড়ীতে ফিরে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। পরে ছাত্রীর পিতা বিষয়টি জহুরুলের পিতা নজরুলকে জানাইলে নজরুল চিৎকার চেঁচামেচী শুরু করে। এতে আশে পাশের লোকজন বিষয়টি জেনে যায়। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনগন জহুরুল কে চড় থাপ্পড় মেরে আটকে রাখে। পরবর্তীতে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা হয়। উক্ত আপোষ মিমাংসায় জহুরুল
তার দোষ স্বীকার পূর্বক এইরূপ কর্মকান্ড ভবিষ্যতে আর কখনও কারও সাথে করবে না মর্মে ভুল
স্বীকার করে চলে যায়। কিন্তু তার পর থেকেই জহুরুল ও তার পিতা ছাত্রীর পিতাকে হত্যা সহ মেয়ের মারাত্মক
মানহানীকর কর্মকান্ড ঘটাইবে বলে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে গালাগালি করে এবং ওই ছাত্রীকে এসিড দিয়ে পুড়িযে মারার হুমকি প্রদর্শন করে। বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে
গেলে থানা মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দেয়। বর্তমানে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদগন মারাত্মক দুশ্চিন্তার মধ্যে জীবন যাপন করছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ভূক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত জহুরুল ইসলাম ইতপূর্বে তিন তিনটে মেয়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো। তাদের প্র‍ত‍্যেকের সঙ্গে চরম দুর্ব‍্যবহারসহ নির্যাতন করে প্রত‍্যেককেই তাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে,
প্রথম স্ত্রীর ৮ মাসের ছেলে সন্তান পিতামাতার কলহের কারনেই মৃত‍্যুবরন করেছে। গ্রামের একাধিক ব‍্যাক্তির সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, জহুরুল ইসলাম স্ত্রী ছাড়াও অনেক নারীর সঙ্গে অশোভন আচরনের জন‍্য গ্রামবাসির হাতে গনপিটুনি খেয়েছেন।
তার তৃতীয় স্ত্রী বলেন, জহুরুল ও তার পরিবারের লোকজন মুখোষধারি। তারা তিন মাসের বাচ্চা সহ আমাকে অমানুষের মতো বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমাকে নিয়ে যাবার জন‍্য সব রকম ভাবে অনুরোধ করলেও তারা কোন কর্নপাত করেন নি। নিরুপায় হয়ে আমি আদালতে নারি ও শিশু নির্যাতন মামলা দিয়েছি। যা চলমান রয়েছে।
গ্রামের এক রাজনীতিবিদ বলেন, তার ( জহরুল) এমন কর্মকান্ডের জন‍্য গ্রামের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন‍্য জহুরুলের ব‍্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বারে (০১৭১৩…..৩৯) একাধিকবার কল করলেও রিসিভ হয়নি।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ( ওসি) খায়রুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, আমি সদ‍্য যোগদান করেছি। এটি আমার যোগদানের পূর্বের ঘটনা। আদালত থেকে যদি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয় তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com