শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৪ পূর্বাহ্ন

নিয়ামতপুরের সেচ নিয়ে বোরোচাষীরা দিশেহারা

মো.আককাস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক 
  • আপডেট সময় : শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৯৫ জন দেখেছেন

মো.আককাস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক :

বোরো আবাদের ভরা মৌসুম। কিছু দিন আগেই জমি ছিলো ফাঁকা আর এর মাঝে মাঝে লাগানো আছে সরিষা। পুরোদমে কৃষক মাঠে বোরোর আবাদে নেমে পড়েছে। অনেকে জমি তৈরি ও রোপনে ব্যস্ত। আবার অনেকের লাগানো শেষ হলেও পানির অভাবে ধানের চারা বাঁচতে দিশেহারা কৃষক। স্বার্থের লোভে অনেক ব্যক্তিগত গভীর নলকূপের মালিকেরা স্অকিম করেছে ৯০ থেকে ১০০ বিঘা। এ কারনে জমিতে সেচ নিয়ে সংকটে পড়েছে কৃষক এবং অনেক জমির ধানগাছ মরতে বসেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ কৃষক। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় গভীর ও অগভীর মিলে প্রায় ১৫০০ টিওবয়েল রয়েছে।

উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলার চন্দননগর, ভাবিচা, শ্রীমন্তপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে ১৪০০ টাকা, নিয়ামতপুর সদর, হাজিনগর, রসুলপুর ও পাড়ইল ইউনিয়নে ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কৃষকের অভিযোগ সেচ কমিটির নির্ধারিত হারে কোথাও সেই টাকা আদায় করা হচ্ছে না এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবে আদায় করছে কৃষকের কাছ থেকে। এ নিয়ে মুখ খুললে দেওয়া হচ্ছে না চাহিদামত পানি। এতে করে জমির পানি শুকিয়ে গেলেও বারবার বলার পরও মিলছে না পানি। এতে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষক। সরোজমিনে উপজেলা ধরমপুর, মাদারীপুর, টিএলবি, গুজিশহরসহ বেশ কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষক বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা জানে না সেচ কমিটির নির্ধারিত ফি। সেচযন্ত্রের মালিকেরা আড়াই হাজার টাকা থেকে তারও বেশি বিঘা প্রতি সেচ চার্জ নিচ্ছে। উপজেলা সদরের মাদারীপুর গ্রামের কৃষক সরেন বলেন, আমি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে ১৫ শতক জমিতে বোরো লাগিয়েছি। কিন্তু পানির অভাবে ধান মরে যাচ্ছে। পানি নিতে সেচযন্ত্রের মালিক নাসিরুলের কাছে গেলেও তিনি পানি দিচ্ছেন না। এতে জমিতে দেখা দিয়েছে ফাটল। ধানগাছগুলো লাল হয়ে পড়েছে। এখন পানি না মিললে ধানগাছ মরে যাবে। ২৫০০ টাকা বিঘা হিসেবে টাকা দেওয়া হলেও অন্য জমিতে পানি দেওয়া হচ্ছে বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন সেচযন্ত্রের মালিক। সেচযন্ত্রের মালিক নাসিরুল বলেন, সবাই একসঙ্গে চাপ দিচ্ছেন পানির জন্য। অনেকে জোর করে পানির লাইন নিজের জমিতে ঘুরিয়ে নিচ্ছে। এতে করে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। একই এলাকার কৃষক সুচিত্র দাস বলেন, ১৫ দিন থেকে জমিতে পানি পায়নি। এতে লাগানো ধান মরে যেতে বসেছে। অনেক টাকা খরচ করে ধান লাগিয়েছি। সুষ্ঠুভাবে ধান উঠবে কি না তা বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে। টাকা দিয়েও পাচ্ছি না পানি। উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের দামপুরা গ্রামের কৃষক রকিবুল ইসলাম বলেন, ২২শ টাকা হারে জমিতে পানি নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছি। বিঘাপ্রতি সেচ কমিটির নির্ধারিত ফি কেউ মানছে না। কৃষক তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বিএমডিএ’র উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, বেশী টাকা নিচ্ছে আমি জানিনা। এবিষয়ে কৃষকের লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আগামী সপ্তাহে মাইকিং করা বহে বলে জানান। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্পতৃক্ষকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির অরো খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com