পাখির সব কলরব, মুক্ত বিহঙ্গে উড়া উড়ির নিদারুণ দৃশ্য দেখা মিলছে নাটোরে নলডাঙ্গা উপজেলায়। এ উপজেলার সমস খলসি,বাঁসভাগ, ঠাকুর লক্ষিকোল গ্রামে রয়েছে পাখি কলোনি সাধারণ মানুষদের কাছে যা পাখি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও নলডাঙ্গা উপজেলায় রয়েছে মিনি কক্সবাজার খ্যাত হালতি বিল। এ বিলে বক,শামুক খোল,পানকৌড়ি, মাছরাঙা সহ দেশি-বিদেশি নানান জাতের পাখির আনাগোনা দেখা যায়, এতে একদিকে ভ্রমণ পিপাসুদের আনন্দ দেয় সেই সাথে সুন্দর অনাবিল পরিবেশ ও পাখির কিচির মিচির কার না ভালো লাগে যা হালতি বিল ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করেছে প্রতিনিয়ত।
এ বিলে ঘুরতে আসা নবাব সিরাজ উদ-দৌলা সরকারি কলেজ এর ছাত্র রবিউল ইসলাম বলেন একসঙ্গে এত পাখির আনাগোনা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। পাখির আগমনে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি এসব পাখি আমাদের মনে আনন্দ দেয় এবং এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে ।
এদিকে শীতের শুরুতে ও বিলের পানি কমে যাওয়ার ফলে হালতি বিল সহ উপজেলায় পাখি শিকারীদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাখি শিকারের জাল সহ বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ দিয়ে শিকার করা হচ্ছে প্রকৃতির এই অবিচ্ছেদ্য অংশকে যা পরিবেশের হুমকি স্বরুপ ।
পাখি শিকার বন্ধের জন্য কাজ করছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পরিবেশ কর্মীরা। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সবুজ বাংলার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ফজলে রাব্বি বলেন, হালতিবিলের পাখিসহ বন্যপ্রানীর নিরাপত্তা রক্ষায় সচেনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি পাখিদের যেন কেউ ক্ষতি না করে সেজন্য পরিবেশকর্মীরা সার্বিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ যেমন দরকার তেমনি দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি করা।তবে এই এলাকাকে সরকারিভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে পাখি গুলো নিরাপদে থাকবে ও শীত মৌসুমে পাখিদের ভিড় আরো বাড়বে।
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রোজিনা আক্তার বলেন বন্য প্রাণী ও পাখি শিকার, হত্যা ও ক্রয়-বিক্রয় আইনিত দণ্ডনীয় অপরাধ এ বিষয়ে নলডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন সব সময় মাঠে রয়েছে। পাখি শিকারের কোন তথ্য পাওয়া মাত্রই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল ও এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।