মোহাম্মদ আককাস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক :

নওগাঁর মান্দায় এক বৃদ্ধের ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী (১৩) কে খাবারের সঙ্গে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। এতে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী ছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

এঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের মৃত জসিম প্রামাণিকের ছেলে অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক মোজাম (৫৫) কে আটক করে থানা পুলিশ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক তাসনিম হোসেন আরিফ বলেন, গর্ভপাতের কারণে স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার দিবারাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবৈধ উপায়ে গর্ভপাত ঘটানোর ফলে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছে সে। তার শারীরিক বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তার আল্ট্রাসোনোগ্রাম করানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও সে শঙ্কামুক্ত নয়।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, রমজান মাসের কিছুদিন আগে এক রাতে তার পড়ার ঘরে গোপনে প্রবেশ করে প্রতিবেশি বৃদ্ধ মোজাম্মেল হক। এসময় তার বাবা-মা অন্য ঘরে ছোটভাইকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। বৃদ্ধ তার ৬ বছর বয়সী ছোট ভাইকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে জানালে ছোট ভাইকে হত্যার পর গুমের হুমকি দেয়। সে আরও জানায়, এরপর থেকে একই হুমকি দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধ তাকে পাউরুটির সঙ্গে ওষুধ খাইয়ে দেয়। এতে বুধবার দুপুর থেকে তার পেটে প্রচন্ড ব্যথাসহ রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এক পর্যায়ে টয়লেটে গিয়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানান, শব্দ শুনে টয়লেটে গিয়ে দেখি তার মেয়ে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর তাকে বাড়িতে রেখেই সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে রাতে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে।

সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ নূর-এ আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বুধবার রাতে মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগামীকাল আদালতের মাধ্যমে তাকে নওগাঁ কারাগারে পাঠানো হবে।